রাজকুমার ঘোষ -
স্বামী মারা যাবার পর গৌরিদেবী ছেলে-বৌমা ও নাতি-নাতনীদের নিয়ে ভরা সংসার
হলেও নিজেকে একাই ভাবতেন,কিন্তু এই সংসারে ওনার দাপট বেশ! সকলে যমের মত ভয়
করলেও নাতি-নাতনীদের স্নেহই করতেন । উনি খুব বাছ-বিচার করতেন, আঁশ-নিরামিষের রান্না নিয়ে বৌমাদের গালিগালাজ করতেন।
উনি সবার ওপরে অসন্তুষ্ট হয়ে প্রায়ই কাশী চলে আসতেন। ছেলেদের সাথে চিঠিতে যোগাযোগ রাখতেন। স্বামীকে আবদার করে কাশীতে একটা বাড়ী করিয়েছিলেন, দুই কামড়ার ঘর নিয়ে বেশ সুন্দর পরিবেশ, একটা ফুলের বাগানও ছিল ।
কাশীতে মহা-উৎসব উপলক্ষ্যে গৌরিদেবী এসেছেন, উনি প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে গঙ্গায় স্নান করে বাবার মন্দিরে গিয়ে প্রনাম করতেন। সারাদিন ঠাকুরের সেবাযত্ন ও ভোগ বিতরণের দেখাশোনা করতেন । কিন্তু এত কিছু করেও তিনি নিচু জাতের লোকেদের এবং ভিখারীদের ঘৃণা করতেন।তাদের মধ্যেই রাধা নামে একটি মেয়েও ছিল। ওর মাকে নাকি গৌরিদেবীর মত দেখতে ছিল, দু’বছর আগে মা মারা যাবার পর কাকার কাছেই থাকত, সেই কাকা খেতে দিতনা তাই ভোগ পাবার জন্য মন্দিরে আসত । গৌরিদেবী ‘মা’ ডাকাতে বিরক্ত হয়ে বলতেন,
-খবরদার, আমাকে মা বলে ডাকবি না
-আমি তোর মেয়ে রাধা আছি রে মা...
-জুতো খুলে মারবো...
পায়ের জুতো খুলে মারতে গেছিলেন, তবুও রাধা আসত ।
রাধার এই আহ্লাদিতে বিরক্ত হয়ে গৌরিদেবী স্থির করলেন বাড়ী ফিরে যাবেন । এও খেয়াল করলেন রাধাও চার-পাঁচ দিন মন্দিরে আসছে না। কোনো একদিন নিম্নচাপের দরুন প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছিল । ওই ভয়ংকর ঝড় বৃষ্টির রাতে বাসায় ফেরার সময় বেশ বেসামাল হয়ে পড়লেন । বাড়ি আসার পথে হোঁচট খেয়ে পড়লেন এবং কোমরে ব্যাথা নিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন । অজ্ঞান হওয়ার মুহুর্তে দেখতে পেলেন রাধা ছুটে আসছে “মা… আমি আসছি, তোর চিন্তা নেইরে”… তারপর, ওনার কিছু মনে নেই । সকালে জ্ঞান ফিরল, দেখলেন,বিছানায় শুয়ে আছেন আর কোমরে ব্যাথাও নেই ।
প্রতিবেশীরা ওনাকে ঘিরে আছেন । তারাই ওনাকে অজ্ঞান অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর উনি গতকাল রাতে ঘটে যাওয়া সবকিছু শোনালেন । কিন্তু প্রতিবেশীদের কাছে শুনলেন রাধা তিনদিন আগে প্রবল জ্বরে মারা গেছে। এই প্রথম দাপুটে গৌরীদেবীর চোখের কোণে যেন বাষ্প জমে উঠলো… !!
উনি সবার ওপরে অসন্তুষ্ট হয়ে প্রায়ই কাশী চলে আসতেন। ছেলেদের সাথে চিঠিতে যোগাযোগ রাখতেন। স্বামীকে আবদার করে কাশীতে একটা বাড়ী করিয়েছিলেন, দুই কামড়ার ঘর নিয়ে বেশ সুন্দর পরিবেশ, একটা ফুলের বাগানও ছিল ।
কাশীতে মহা-উৎসব উপলক্ষ্যে গৌরিদেবী এসেছেন, উনি প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে গঙ্গায় স্নান করে বাবার মন্দিরে গিয়ে প্রনাম করতেন। সারাদিন ঠাকুরের সেবাযত্ন ও ভোগ বিতরণের দেখাশোনা করতেন । কিন্তু এত কিছু করেও তিনি নিচু জাতের লোকেদের এবং ভিখারীদের ঘৃণা করতেন।তাদের মধ্যেই রাধা নামে একটি মেয়েও ছিল। ওর মাকে নাকি গৌরিদেবীর মত দেখতে ছিল, দু’বছর আগে মা মারা যাবার পর কাকার কাছেই থাকত, সেই কাকা খেতে দিতনা তাই ভোগ পাবার জন্য মন্দিরে আসত । গৌরিদেবী ‘মা’ ডাকাতে বিরক্ত হয়ে বলতেন,
-খবরদার, আমাকে মা বলে ডাকবি না
-আমি তোর মেয়ে রাধা আছি রে মা...
-জুতো খুলে মারবো...
পায়ের জুতো খুলে মারতে গেছিলেন, তবুও রাধা আসত ।
রাধার এই আহ্লাদিতে বিরক্ত হয়ে গৌরিদেবী স্থির করলেন বাড়ী ফিরে যাবেন । এও খেয়াল করলেন রাধাও চার-পাঁচ দিন মন্দিরে আসছে না। কোনো একদিন নিম্নচাপের দরুন প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছিল । ওই ভয়ংকর ঝড় বৃষ্টির রাতে বাসায় ফেরার সময় বেশ বেসামাল হয়ে পড়লেন । বাড়ি আসার পথে হোঁচট খেয়ে পড়লেন এবং কোমরে ব্যাথা নিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন । অজ্ঞান হওয়ার মুহুর্তে দেখতে পেলেন রাধা ছুটে আসছে “মা… আমি আসছি, তোর চিন্তা নেইরে”… তারপর, ওনার কিছু মনে নেই । সকালে জ্ঞান ফিরল, দেখলেন,বিছানায় শুয়ে আছেন আর কোমরে ব্যাথাও নেই ।
প্রতিবেশীরা ওনাকে ঘিরে আছেন । তারাই ওনাকে অজ্ঞান অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর উনি গতকাল রাতে ঘটে যাওয়া সবকিছু শোনালেন । কিন্তু প্রতিবেশীদের কাছে শুনলেন রাধা তিনদিন আগে প্রবল জ্বরে মারা গেছে। এই প্রথম দাপুটে গৌরীদেবীর চোখের কোণে যেন বাষ্প জমে উঠলো… !!
প্রকাশিত - দিগন্তরেখা সাহিত্য পত্রিকা, ২০১৭
No comments:
Post a Comment