Sunday, May 26, 2019

অণুগল্প - ট্যাক্সি ড্রাইভার


রাজকুমার ঘোষ  -



সোনাই অফিস থেকে রাস্তায় এসে তার মোবাইলটা দেখলো প্রায় দশটা মিসকল হয়ে আছে। যার মধ্যে ওর মাএর আটটা। মাকে কল করে জানালো,

- মা আজ ভীষণ ওয়ার্কলোড ছিলো, তাই আমি তোমার কল ধরতে পারিনি। এই বেরোলাম অফিস থেকে। এখন রাস্তায়। ১০টা বেজে গেছে। সেভাবে কোনো ট্যাক্সি দেখতে পাচ্ছি না। তুমি চিন্তা করো না। আমি ঠিক পৌছে যাবো।

আজ সত্যি ভীষণ দেরী হয়ে গেছে। অফিসে নতুন প্রজেক্ট এসেছে। তাই কাজের প্রেসার। সোনাইয়ের কিছু করার নেই। অনেক কষ্টে সে একটা ট্যাক্সি দেখতে পেলো। হাত নাড়া দিতেই ট্যাক্সি কাছে চলে এলো। সোনাই ড্রাইভারকে তার গন্তব্য বলে ট্যাক্সিতে চড়ে বসলো। এসি ট্যাক্সিতে বসেই সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে সে চোখ বুজে ফেললো।

ড্রাইভার সবকিছু লক্ষ্য করেছিলো। ড্রাইভারের মনে একটু কৌতুহল হলো। সে দেখলো সোনাই বেশ সুন্দরী। তার ওপর তার পোশাকও বেশ খোলামেলা। মনের মধ্যে একটা সুপ্ত বাসনা জেগে উঠলো। প্রতিদিন একঘেয়ে পরিচিত বৌয়ের শরীরতো রোজ দেখছে, স্পর্শ করছে। আজ না হয় এই নতুন কচি মেয়েটার শরীরটাকে একটু চেখে নেবে। ক্ষতি কি! শহরে কত কিই না হচ্ছে। যাই হোক, আজ এমন সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না। ড্রাইভার ট্যাক্সিটাকে একটা নিরালা জায়গায় নিয়ে চলে এলো। তারপর তার ঝোলা থেকে একটা পাঁইটের বোতল নিয়ে টুক করে একটু গলায় ঢেলে নিলো। এরপর সে তার কামনা বাসনা মেটানোর আশায় ট্যাক্সির পেছনের সিটে বসা সোনাইয়ের কাছে চলে এলো। ভালো করে তার সর্বাঙ্গ পর্যবেক্ষণ করে তুলতুলে ঠোঁটে একটা চুমু দিতে যাবে কি সোনাই চোখ খুলে চিৎকার করতে গেলো...........................  

ট্যাক্সির হর্ণটা বেজে উঠতেই চোখ খুলে সোনাই ভীষণভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়লো।ম্যাডাম, আপনার বাড়ি এসে গেছি”... সোনাই বুঝলো তাহলে তার দুঃস্বপ্ন ছিলো, ক্লান্তিতে তার দুচোখ বুজে গেছিলো। ড্রাইভার তাকে তার গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছে। সে ভাড়া মিটিয়ে বাড়ির দিকে এগোবার আগে ড্রাইভারের দিকে ঘুরে গেলো, ড্রাইভারকে কৃতজ্ঞতার সাথেথ্যাংক ইউ দাদাজানালো। ট্যাক্সি ড্রাইভার জানালো, থাংকু কিসের জন্য ম্যাডাম। ঘরের মেয়েকে ঠিকভাবে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব এক ড্রাইভারেরও         

প্রকাশিতঃ আমাদের লেখা পত্রিকার দশম সংখ্যায়, January,2019 

4 comments: